
স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েছে বাংলাদেশ। দেশ আজ এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে।
১৯৭০ এর নির্বাচনের ভোটাধিকারের জন্যইত ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ। কিন্তু সেই ভোটাধিকার আজ আওয়ামী লীগ এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীর মর্জির উপর আটকে রয়েছে। তখনকার স্বৈরাচার এখন ফ্যাসিজম। চলছে শাসকগোষ্ঠীর ফ্যাসিজমের খুল্লমখুল্লা রাজত্ব।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। জাতীয় জীবনের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে আজ এমন একজন মানুষ সম্পর্কে লিখছি, যিনি জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, উন্নত, সমৃদ্ধ-আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি, আমাদের দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আজ তার ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।
জিয়াউর রহমান যখন জাতির হাল ধরেন, তখন জাতি হিসেবে আমরা ছিলাম বহুধাবিভক্ত। শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি জাতীয়তাবাদ দেশের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মাঝে যে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করে, তা দেশের অর্থনৈতিক, উন্নয়ন, সামাজিক শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতীয়তার পরিচয়ের এক অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। জাতীয় জীবনের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিপরীতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’-এর প্রবর্তন করেন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’র ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে সব মতের মানুষের সম্মিলন ঘটিয়েছিলেন। দেশ ও মানুষই তার রাজনীতির প্রধান প্রতিপাদ্য ছিল।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে, শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এমন কোনো অঙ্গন নেই যা নিয়ে জিয়াউর রহমান ভাবেননি । জিয়াউর রহমানের বড় গুণ ছিল, তিনি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন । ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে এর শুরু এবং রাষ্ট্র পরিচালনায়ও এর প্রতিফলন দেখা যায়।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে তিনি নিহত হন। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে ভূমিকা রেখেছেন, বর্তমান বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ইতিহাস পাঠ করতে গেলে সে অবদান তাকে বারবার প্রাসঙ্গিক করে তুলে।
তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে জিয়াউর রহমান দেশকে স্বনির্ভরতার পথে তুলে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ আবারও পথভ্রষ্ট । দেশকে সঠিক পথে পরিচালনা ও সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারে জিয়াউর রহমানের নীতি ও চিন্তা বর্তমানেও শতভাগ প্রাসঙ্গিক।
লিখেছেন জনাব মাহবুব চৌধুরী, বিএনপি নেতা, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানী, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাত্তন কেন্দ্রীয় নেতা, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক।