
সেনা উদ্যোগে পানি সংকট দূর ও স্বাস্থ্যসেবার প্রতিশ্রুতি, মাদক-অস্ত্র থেকে দূরে থাকতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান।
শুভরঞ্জন বড়ুয়া
আলীকদম ( বান্দরবান ) প্রতিনিধি।
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নে শান্তি, সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সহনশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নবনির্মিত কুরুকপাতা বৌদ্ধবিহার উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নবনির্মিত এই বৌদ্ধবিহারের উদ্বোধন উপলক্ষে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ম্রো ও মার্মা সম্প্রদায়ের ধর্মাবলম্বী, ভান্তে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের অংশগ্রহণে পুরো এলাকায় এক ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
৪ নম্বর কুরুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩১ বীর আলীকদম সেনাজোনের জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. আশিকুর রহমান আশিক, এসপিপি, পিএসসি।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে কুরুকপাতা ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, বহু পাড়ায় পানির সংকট রয়েছে। এসব এলাকায় সোলার সিস্টেম ব্যবহার করে মোটরের মাধ্যমে নিচ থেকে পানি তোলার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
জোন কমান্ডার আরও জানান, পাহাড়ভাঙ্গা পাড়া এলাকায় নতুন স্কুল স্থাপনের কাজ চলমান। যেসব দুর্গম পাড়ায় চিকিৎসাসেবা নেই, সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে ছোটখাটো ওষুধের দোকান স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
জোন কমান্ডার অভিভাবক ও তরুণ-যুবকদের উদ্দেশে বলেন, “কুরুকপাতা ইউনিয়ন মিয়ানমার সীমান্তবর্তী হওয়ায় অস্ত্র ও মাদক প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে। এগুলো আপনাদের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই তরুণ-যুবকদের এসব অপরাধ থেকে দূরে রাখতে অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী কারও ক্ষতি করতে নয়, বরং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই দায়িত্ব পালন করছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম সেনাজোনের উপ-অধিনায়ক মো. হাসান পলাশ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিমন সহ মার্মা–ম্রো সম্প্রদায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আলীকদম সেনাজোনের তত্ত্বাবধানে এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ, সুবিধাবঞ্চিত শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ এবং বৌদ্ধবিহারের উন্নয়নে জেলা পরিষদ ও সেনাজোনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।



