
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক গৃহবধূর রহস্য জনক মৃত্যু। মৃত গৃহবধূর নাম মোছা. অন্তরা বেগম (২৯)। সে সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের নটখোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মো. মিরু শেখের স্ত্রী। অচেতন অবস্থায় শনিবার (৬সেপ্টেম্বর) সকালে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৃহ পরিচালিকার ভিসায় বিদেশ গমনেচ্ছু দুই সন্তানের জননী অন্তরা বেগমকে বিদেশ যেতে বাধা দেয় স্বামী। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া বিবাদ লেগেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গতরাতে দুজনে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। অভিমানে রাতের কোনো একসময় ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছু খেয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রতিবেশিরা। ভোরে ঘুম থেকে জেগে স্ত্রীকে অচেতন দেখে প্রতিবেশীদের সাহায্যে বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে স্বামী মিরু শেখ। এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. শরিফুল ইসলাম শুভ তাকে মৃত ঘোষণা করে। স্বামী মো. মিরু শেখ জানান- ‘আমার শাশুড়ির প্ররোচনায় আমার স্ত্রী বিদেশে গৃহ পরিচালিকার ভিসায় যেতে এক দালালের খপ্পরে পড়ে। তাকে উচ্চ বেতনের আশ্বাস দেওয়ায় সে বিদেশে যেতে জিদ ধরে।আমি তাকে বিদেশে যেতে মানা করি। কিন্তু সে আমাকে না জানিয়ে পাসপোর্ট ভিসা এমনকি হাতের ছাপ গোপনে দিয়ে আসে। এটা জানতে পেরে আমি তাকে গতরাতে রাগারাগি করি। ঘুম থেকে জেগে দেখি সে অচেতন, শরীরও ঠান্ডা। দ্রুত তাকে বোয়ালমারী হাসপাতালে নিয়ে আসে। ডাক্তার জানায় সে মারা গেছে। আমার মা-বাপ জমিজমা কিছু নাই, সরকারি ঘরে থাকি। ডা. শুভ জানান – স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মৃতদেহ নিজেদের হেফাজতে নেয়। সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশের উপপরিদর্শক শিমুল মোল্যা জানান- খবর পেয়ে আমরা মৃতদেহ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সুরতহাল করেছি। তার দেহে কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। তবে বাম চোয়াল কিছুটা ফোলা ছিলো। তার মুখেও কোনো গন্ধ পাওয়া যায় নাই। এটা আত্মহত্যা কিনা সেটা ময়নাতদন্ত শেষে বোঝা যাবে। আমরা মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠান হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা সালথা থানা পুলিশ গ্রহণ করবে। সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো. আতাউর রহমান জানান – বিষয়টি অবগত হয়েছি। মৃত গৃহবধূর স্বামী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



