
মো: জাহিদুল ইসলাম,
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি।
ভারতের সিকিমের পাহাড়ে ও সমতলে ভারী বর্ষণসহ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদী গর্জে উঠেছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৬ টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার (৫২.১৫) ৭ সেন্টিমটার ওপর (৫২.২২) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬ টায় বিপদসীমার ২ সেন্টিমটার নিচে ছিল। ১২ ঘন্টা ঘন্টার ব্যবধানে ৯ সেন্টিমটার পানি বৃদ্ধি পায়। তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশী অমিতাভ চৌধুরী। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লইচগেট খুলে রাখা হয়েছে। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা অববাহিকার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী জানায় তিস্তায় ঘন ঘোলাপানি ধেয়ে আসছে। নদীপারে শোঁশোঁ শব্দ এলাকা কাঁপিয়ে তুলছে।
ডালিয়া পাউবোর বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারী বর্ষন ও পাহাড়িঢলে তিস্তা নদীতে ঢল নেমেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে বলা হয়েছে।
এদিকে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমটির ওপর দিয়ে প্রবাহের কারনে নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা উপজেলা, লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম, কালিগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তিস্তা ব্যারেজের ভাটি দিকে তিস্তা নদী দিক পরিবর্তনে নীলফামারীর বাইশপুকুর মৌজা এলাকার তুহিন ক্রস বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ভাঙ্গনেরও আশংকা করা হচ্ছে। এটি বিধ্বস্থ হলে চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে। মানুষজন বাঁধটি রক্ষার্থে বাঁশের ও কাঠের গুড়ি এবং বালির বস্তা ফেলছেন বলে জানা গেছে।এদিকে তিস্তার পানি চরাঞ্চলের বাড়িঘরের চারপাশে প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। তলিয়ে গেছে চরের সড়ক। ডুবে গেছে ওইসব এলাকার ফসলি জমিগুলো।
তিস্তা নদী ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। তিস্তাপাড়ের মানুষজন জানান, সারারাত ধরে তিস্তা অববাহিকায় বৃস্টি চলছে। সকালেও সেই বৃস্টি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তার ঢল ও বৃস্টির কারনে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন, এতে বন্যার আশঙ্কা করছে চর এলাকাবাসী।