
মো: জাহিদুল ইসলাম,
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়ন গয়াবাড়ী ইউনিয়ন ও টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন এর বন্যা এলাকা পরিদর্শন ও খোজখবর নিলেন নীলফামারী -১ ডোমার – ডিমলা আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জননেতা নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিমলা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান ডিমলা উপজেলা শাখা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা রোকনুজ্জামান বকুলসহ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মীরা। অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিস্তা বাসীরা বলছেন পানি বাড়া কমায় বানভাসিদের ভোগান্তি কমছে না অনেকে নদী ভাঙ্গনে ঘর ছাড়া এতে বানভাসি মানুষ আতঙ্কে দিন যাপন করছে। তিস্তায় পানি কমায় ডিমলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকা থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে। এতে মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও সব এলাকা স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর পরিষ্কার করছেন, কেউ কেউ বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছেন। তবে চলতি মৌসুমে পরপর তৃতীয় দফা বন্যায় রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫৪৩ একর আমন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি সবজি বাগান ও অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে প্রকৃত ক্ষতির চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে।
অনেক কৃষকের অভিযোগ, এবারের বন্যায় ধান রোপণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গবাদিপশুর জন্য শুকনো খড় নষ্ট হওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মাছ চাষিরা পুকুর ও ঘেরের পাড় ভেঙে মাছ ভেসে যাওয়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। চলতি বন্যায় উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশা চাপানি ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি ছিল তারা ত্রাণ নয়, বরং তিস্তা তীর রক্ষা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান চান।
পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের এক কৃষক বলেন, “প্রতি বছরই বন্যা আসে, ফসল নষ্ট হয়। এবার চারবার পানি এসে সব শেষ করে দিল সরকারি সাহায্য পাইনি, চাই তিস্তার ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা। খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামের গৃহবধূ বলেন, বন্যায় ঘরবাড়ি সব পানিতে ছিল। পানি নেমে গেলেও কষ্ট কমেনি। ঘরে খাবার নেই, শুকনো খড়ও নেই গরুর জন্য। গয়াবাড়ি ইউনিয়নের এক মৎস্যচাষি জানান, পুকুরের সব মাছ বেরিয়ে গেছে। এবার কীভাবে ঋণ শোধ করব, ভেবে পাচ্ছি না। একই এলাকার ভুক্তভোগী আরেক কৃষক বলেন, আমাদের ফসল নদী ভাঙনের সঙ্গে ভেসে গেছে, কয়েক বছরের পরিশ্রম এক মুহূর্তে শেষ। এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, দ্রুত পানি কমায় তিস্তার তীরে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এজন্য আমরা প্রস্তুত আছি। পর্যাপ্ত জিওব্যাগ মজুত রয়েছে, যেখানে ভাঙন দেখা দেবে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।