মো: জাহিদুল ইসলাম,
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি।
দ্বিতীয় সন্তান প্রসবে সিজার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন চন্দনা রানী (২৯) নামের এক গৃহবধু। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শহরের সেবা হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে।
অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের ভুলের কারণে এমন মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে এটি দেড় লাখ টাকায় রফাদফা করা হয়।এঘটনার বিষয়ে কথা হলে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারি বলেন, আমরা অভিযোগ কোন পাইনি। তবে বিভিন্নজনের কাছে বিষয়টি শুনতে পেয়েছি। যদি কোন সংবাদ মাধ্যমে খবরটা প্রকাশ হয়, তাহলে আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে, তা তদন্ত করব। অপর দিকে ডোমার থানার ওসি মো আরিফুল ইসলাম জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের পক্ষে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে জিডিতে স্বজনদের কোন আপক্তি না থাকায় তাদের মরদেহ হস্তান্তর করেছি।
জানা যায়, নিহত প্রসূতি এ নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের মধ্য সুন্দর খাতা গ্রামের জগনাৎ চন্দ্রের মেয়ে চন্দনা রানী। তার স্বামী একই উপজেলার ডিমলা বাবুরহাট গ্রামের দীপক চন্দ্র রায় ও তাদের তৃপ্ত চন্দ্র (৮) নামে এক পুত্র রয়েছে। সিজার করে আবারও এক পুত্র জন্ম দেয়। নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে। নিহত প্রসূতির মা মিনু রানী ও স্বজনরা জানান, সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে প্রসূতি চন্দনা রানীর পানি ভেঙ্গে গিয়ে প্রসব বেদনা উঠে। আমরা প্রসূতিকে নিয়ে ডোমার উপজেলা শহরে সেবা নামের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। এসময় সিজার করলেই হবে, প্রসূতির অন্য কোন সমস্যা নেই বলে জানান ওই হাসপাতালের চিকিৎসক আইনুল হক।
তারা আরও জানান, চিকিৎসক বিলম্ব ঘটিয়ে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকাল তিনটায় প্রসূতিকে সিজার করেন। সিজারে পুত্র সন্তান জন্ম নিলেও প্রসূতির রক্তপাত হতে থাকে। অভিযোগ করে স্বজনরা বলেন, আমরা ডাক্তারকে বলি, হয় রক্তপাত বন্ধ করেন না হয় রোগীকে রেফার করেন, আমরা রংপুরে নিয়ে যাব। কিন্তু ওরা রোগীকে না চিকিৎসা দিয়েছে না রিলিজ করেছে। এরপর বুধবার সকালে যখন প্রসূতিকে রিলিজ দিয়ে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে তখন রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ওরা ইচ্ছাকৃত রোগীকে মেরে ফেলেছে। আমরা বিচার চাইতে গেলে ওরা জোরপূর্বক মিমাংসার কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছে। দুই একজন ছাড়া সবাই ওদের পক্ষে ছিল। প্রভাবশালী কিছু লোকজন আমাদের দেড় লাখ টাকা দিয়ে লাশ বাড়ি পৌঁছে দিয়ে দুপুরের মধ্যে সৎকার করতে বাধ্য করেছে বলে প্রসূতির মা কান্না বিজরিত কন্ঠে অভিযোগ করেন। ডোমারের বেসরকারি সেবা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ডা. আইনুল হককে ফোনে কল দিলেও পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল রিসিভ করে চিকিৎসকের ছেলে জানান, তার বাবা অসুস্থ তাই ঘুমাচ্ছেন