Friday, September 19, 2025
Friday, September 19, 2025
Homeঅর্থ বাণিজ্যদুর্বল ৫ ব্যাংকের ভাগ্য নির্ধারণে শুনানি শুরু।

দুর্বল ৫ ব্যাংকের ভাগ্য নির্ধারণে শুনানি শুরু।

ব্যাংকিং খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে দুর্বল পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগে চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ থেকে শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক শুনানি। তবে শেষ মুহূর্তে একীভূতকরণ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে দুটি ব্যাংক। একীভূত হওয়ার তালিকায় সব থাকবে, নাকি কোনো ব্যাংক নিজেকে রক্ষা করতে পারবে, সেই আলোচনা রয়েছে ব্যাংকপাড়ায়। ব্যাংকগুলোকে কেন একীভূত করা হবে না, সে বিষয়ে ব্যাখ্যাও তলব করা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে আমানতকারী ও কর্মীরা।

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় থাকা ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। সূত্র জানায়, মূলধনের ঘাটতি, খেলাপি ঋণের চাপ, তারল্য সংকট ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে এসব ব্যাংক টিকে থাকার সক্ষমতা হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রথম চারটি বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল, আর এক্সিম ব্যাংক ছিল নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণে।

গত এক বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের তারল্য সহায়তা দিয়েও এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়নি। তাই আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ফেরাতে এসব ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত ধাপে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতামত নিতে শুনানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন অংশ নেবে এক্সিম ব্যাংক।

এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর এসআইবিএল, ২ সেপ্টেম্বর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ৩ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন ও ৪ সেপ্টেম্বর গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক শুনানিতে অংশ নেবে। শুনানিতে চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদের সব সদস্য এবং এমডিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

দুশ্চিন্তায় আমানতকারীরা : একীভূত করার সিদ্ধান্ত জানাজানির পর থেকেই আমানত তোলার চাপে রয়েছে ব্যাংকগুলো। এতে ব্যাাংকগুলোর তারল্য সংকট আরও তীব্র হয়েছে। ব্যাংকগুলো থেকে চাহিদানুযায়ী টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা। একীভূত হওয়ার পর আমানতের টাকা তুলতে পারবেন কিনা সেই শঙ্কাও প্রকাশ করছেন অনেকেই। ইউনিয়ন ব্যাংকের আমানতকারী গোলাম ফারুখ আমাদের সময়কে বলেন, ব্যাংকটিতে তার জমানো ৭ লাখ টাকার মতো আটকে আছে। দীর্ঘদিন চেষ্টা করে ১ লাখ টাকার কিছু বেশি তুলতে পেরেছেন। ব্যাংক একীভূত হলে তার এই আমানতের কী হবে- এই প্রশ্ন রাখেন তিনি। দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, দুর্বল ব্যাংকের একীভূতকরণ চলমান প্রক্রিয়া। তবে এতে আমানতকারীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই; সরকার আমানকারীদের সব দায়িত্ব নেবে।

চাকরি হারানোর ভয়ে কর্মীরা : একীভূত হলে নতুন ব্যাংকের অনেক শাখা একই এলাকায় পড়ে যাবে। এতে কর্মী ছাঁটাইয়ের শঙ্কা তৈরি হবে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ছাঁটাই এড়াতে গ্রামীণ এলাকায় নতুন শাখা খোলা হবে এবং স্থানীয় আমানত স্থানীয় এলাকাতেই বিনিয়োগ করা হবে।

প্রক্রিয়া সম্পন্নে লাগবে বিপুল অর্থ : বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এসব ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ হাজার কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগ হিসেবে সরকারের কাছে চেয়ে গত সপ্তাহে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সব ব্যাংকের চাঁদায় গড়ে ওঠা আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে। এ জন্য আমানত বিমা আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: