Sunday, April 27, 2025
Sunday, April 27, 2025
Homeআইন আদালতপথ ২ শিশুর আশ্রয় মিলল শিবগঞ্জে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

পথ ২ শিশুর আশ্রয় মিলল শিবগঞ্জে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:

পথ দুই শিশুর আশ্রয় মিলেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে। মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক কাঞ্চন কুমার দাস। জানা গেছে, শিশু মন্টু ও ঝন্টু (ছদ্মনাম)। সম্পর্কে তারা দুই ভাই। সম্প্রতি তাদের বাবা সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। মৃত্যুর পর শিশুদের মা দ্বিতীয় বিবাহ করে নতুন স্বামীর সাথে সুখে থাকার আশায় অন্যত্র গিয়ে সংসার শুরু করে। ফলে শিশুদের কোন খোঁজ খবর রাখে না। এদিকে শেষ আশ্রয় হিসেবে বৃদ্ধ নানা-নানীর কাছে থাকত শিশুরা। শিশুদের মায়ের শুরুতে নতুন সংসারে ভালই দিন কাটতে লাগলো। কিন্তু সুখ তার কপালে বেশি দিন সইলো না। কয়েক বছর যেতে না যেতেই শিশুদের সৎপিতা অতিমাত্রায় ঘুমের ঔষুধ সেবন করলে তিনিও মারা যান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুদের মায়ের ঠিকানা হয় আমনুরা রেল স্টেশনের সরকারি জায়গায় স্থাপিত ঝপড়ি ঘর, নোংরা ও অনিরাপদ পরিবেশে। শিশুর নানা-নানী বৃদ্ধ হওয়ায় কোন কাজ করতে না পারায় স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন রকম জীবন ধারণ করে। সামান্য ভাল থাকার আশায় রাস্তায়, স্টেশনে, ডাস্টবিনে টোকায়ের কাজ করে শিশুরা। কখনও কখনও পেটের দায়ে ভিক্ষার মত নির্লজ্জ কাজও করে। তাদের ছিলনা কোন ভাল জামা-কাপড়, ছিলনা কোন অন্ন যা দিয়ে তাদের পেটের অসহ্য ক্ষুধা নিবারণ হতো, পায়নি শিক্ষার আলোও। কেউ দেয়নি তাদের ভালবাসা, দিয়েছে শুধু লাঞ্ছনা-গঞ্চনা, বঞ্চনা আর অবহেলা। তারা অভিশপ্ত জীবন যাপন করতো। এক পর্যায়ে সমাজসেবা অধিদফতর অধীন সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের সোশ্যাল ওয়ার্কার আরমান আলী আমনুরা স্টেশনে গিয়ে তাদের এ দৃশ্যপট দেখে শিশুদের পরিবারের সাথে কথা বলে এবং কেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক কাঞ্চন কুমার দাসকে অবহিত করেন। উপপ্রকল্প পরিচালক শিশুদের কেন্দ্রে নিয়ে এসে দ্রুত ভর্তি করানোর নির্দেশ প্রদান করলে ওই কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এ বিষয়ে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক কাঞ্চন কুমার দাস জানান, জরুরী ভিত্তিতে কেন্দ্রের প্যারামেডিক্স চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় শিশুদের। দেওয়া হয় গোসলের জন্য সাবান ও শ্যাম্পু। পরিধানের জন্য নতুন পোষাকসহ দেওয়া হয় বিভিন্ন উপকরণ। একই সঙ্গে পেটের ক্ষুধা নিভানোর জন্য নিয়মিত তিন বেলা খাবার ও দুই বেলা নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি আরো জানান, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সাইকোলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা, খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাও করা হয়। পথ দুই শিশু বর্তমানে অনেক ভাল আছে। তাদের আচরণগত অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পাশাপাশি আগের চেয়ে সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী হয়েছে তারা। নিয়মিত নামাজ ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করছে। মনোযোগী হয়েছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণে। তারা পূর্বের জীবনে ফিরে যেতে চায় না। তারা বড় হয়ে ভাল কিছু করার স্বপ্ন দেখছে। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মায়ের সস্তানেরা ও পরিবারই হোক তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: