Saturday, December 20, 2025
Saturday, December 20, 2025
Homeআইন আদালতমাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তিস্তায় পাথর উত্তোলন থামছে না, বাড়ছে ভাঙন।

মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তিস্তায় পাথর উত্তোলন থামছে না, বাড়ছে ভাঙন।

মো: জাহিদুল ইসলাম,
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি।

মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলন কোনোভাবেই থামছে না, শত শত ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে প্রতিদিনই পাথর তোলা হচ্ছে। এরপর ট্রলিতে করে তা নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়, এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, বাড়ছে তীরবর্তী ভাঙনের ঝুঁকি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর ধারে থাকা মানুষজন।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাইশপুকুর, চরখড়িবাড়ী, একতা বাজার, তেলির বাজার, তিস্তা বাজার ও বাঁধ এলাকায় অন্তত ১৫-২০টি স্থানে অবাধে চলছে পাথর উত্তোলন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে পাথর তোলার কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। তীরবর্তী ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। একই সঙ্গে গ্রামীণ রাস্তায় পাথরবোঝাই ট্রলি চলাচলের কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়ক।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী জেলা প্রশাসকের কাছে নুড়ি পাথর তোলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। পরে অনুমতি দেওয়া হলে তারা বোমা মেশিন বসিয়ে খাসজমি ও নিজস্ব জমি থেকে পাথর-বালু তুলতে থাকেন। স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তখন থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল গোপনে নদী থেকে পাথর তুলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তা স্থায়ী কোনো সমাধান আনতে পারেনি। নদীর ধারে বসবাসকারীরা প্রতিনিয়ত ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। চরখড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা হাসিনুর রহমান বলেন, এভাবে নদী থেকে পাথর তুলতে থাকলে নদী তার গতিপথ হারাবে। আমরা যারা নদীর ধারে থাকি, সব সময় ভয়ে থাকি, কখন যে ভেঙে ঘরবাড়ি নদীতে চলে যায়।

একতা বাজার এলাকার কৃষক নুরুল আমিন বলেন, নদী থেকে এত পাথর তোলা হচ্ছে যে ধানের জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে। আমার প্রায় তিন বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। আমরা কৃষকরা এখন পথে বসার আশঙ্কায় আছি। তিস্তা বাজার এলাকার দোকানদার আতিকুর রহমান বলেন, রাতে এত ট্রলি চলে যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেও ভয় লাগে। রাস্তায় গর্ত হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে একটা ট্রলি উল্টে কয়েকজন আহতও হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, সবাই জানে কারা এ কাজ করছে। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় না থাকলে এভাবে পাথর তোলা সম্ভব না। মাঝে-মধ্যে অভিযান হয়, কিন্তু দু-এক দিন পর আবার আগের মতো শুরু হয়ে যায়। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা তৎপর আছি। তথ্য পেলেই অভিযান পরিচালনা করি।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: