Monday, December 15, 2025
Monday, December 15, 2025
Homeবিশেষ প্রতিবেদনসাহিত্যই মানুষের মধ্যকার বিভেদের দেয়াল দূর করে দিতে পারে ...অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক...

সাহিত্যই মানুষের মধ্যকার বিভেদের দেয়াল দূর করে দিতে পারে …অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুদ রানা।

বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুদ রানা বলেছেন, সাহিত্যই মানুষের মধ্যকার বিভেদের দেয়াল দূর করে দিতে পারে। সাহিত্যই মানুষকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে তুলে। যাদের মধ্যে নান্দনিকতা, মানবিকতাবোধ আছে তারাই সাহিত্যচর্চা এগিয়ে আসে। সত্যিকার অর্থে সাহিত্যই সমাজের বাতিঘর। সেই বাতিঘরকে অনুসরণ করে আমাদেরকে আলোর পথে চলতে হবে। বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ সাহিত্যচর্চার যে মহান লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে, তাদেরকে আমি সাধুবাদ জানাই।
বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ আয়োজিত সংগঠনের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টিবি গেইটস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিষদের সভাপতি কবি ও গল্পকার রাহনামা শাব্বীর চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাসাহিত্যের শক্তিমান কবি শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কালাম আজাদ, প্রবীণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী, কবি ও বাচিকশিল্পী সালেহ আহমদ খসরু।
বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সহসভাপতি ইশরাক জাহানা জেলী ও রিফাত আরা রিফার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কবি ও সাহিত্য সমালোচক বাছিত ইবনে হাবীব, বিশিষ্ট কবি সালেহ আহমদ, সাইক্লোন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ভ্রমণকাহিনী লেথক মোয়াজ আফসার, পরিষদের আন্তর্জাতিক সমন্বয়ক দেওয়ান নূর চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শুকরানা বেগম। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন পরিষদের সহসভাপতি সেনুয়ারা আক্তার চিনু, জুঁই ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা বাঁশি খুৎহৈবম, আইন বিষয়ক সম্পাদক শিপারা শিপা, সহ সাহিত্য সম্পাদক কাওসার আরা বীথি, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এনএ আশালতা, সমাজকল্যাণ সম্পাদক সৈয়দা রিমি কবিতা, অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম লিটন, কবি এখলাসুর রহমান, কবি আয়েশা করিম মুন্নী, সেরাম নিরঞ্জন, পৃথ্বিশ চক্রবর্তী, কবি নাসরিন সুলতানা, কবি পুলক কান্তি ধর, শরিফুল হাসান শুভ্র, মোহাম্মদ শাহজাহান, মুসা রেজা চৌধুরী, কবি ও সংগঠক ফুয়াদ বিন রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন পরিষদের সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট রেহানা বেগম, কণ্ঠশিল্পী সুরাইয়া আক্তার ডেইজি, কণ্ঠশিল্পী প্রিয়াংকা চৌধুরী। ম্যাজিক প্রদর্শন করেন ম্যাজিশিয়ান আমির হাসান সোহাগ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন পরিষদের সহ প্রচার সম্পাদক কবি কামাল আহমদ। অনুষ্ঠানে অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÑকবি সুয়েজ হোসেন, কবি সন্তোষ রঞ্জন পাল, শিল্পী শিব্বির আহমদ, শিল্পী শাহিন, কবি ও গীতিকার সেলিম খান, গীতিকার কুবাদ বখত রুবেল, তাবিন্দা শাব্বীর চৌধুরী, সৈয়দা তায়্যিবা, আফিয়া সুলতানা, রোমানা আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম, কবি মেলাদ আহমেদ, কবি জাকির হোসেন জাকির, আজাদ চৌধুরী প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ কালাম আজাদ বলেন, আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দুটি কথা বলছি। একটি হচ্ছেÑমানুষকে সম্মান করলে সম্মান পাওয়া যায়। তাই আমাদের উচিত সবাইকে সম্মান করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছেÑযেকোনো কাজে সফল হতে হলে সেই কাজ একটু বেশি করে করা। যারা সাহিত্য নিয়ে কাজ করতে চান, তাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন কিছু না কিছু লেখা।
প্রবাণী সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী বলেন, আমাদের জীবনে আনন্দ দরকার। সাহিত্য সেই আনন্দ নিয়ে আসে। আনন্দ ও রসবোধ আমাদেরকে সৃষ্টিশীলতায় উদ্বুদ্ধ করে। বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ সাহিত্যের জন্য যে কাজ করছে, তাতে তারা প্রশংসার প্রাপ্য।
কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল বলেন, সংস্কৃতিতে একটি কথা আছে, সিলেট মধ্যমা নাস্তি। দেশ থেকে দেশান্তরে সিলেটের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। এই সিলেটেই প্রথম ১৯৩৫ সালে শ্রীহট্ট সাহিত্য পরিষদ গঠন করা হয়। এর পরবর্তী বছর ১৯৩৬ সালে উপমহাদেশের প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধেও সিলেটের লেখকদের অবদান রয়েছে। আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারাবাহিকতা হচ্ছে বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ। এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রইলো অভিনন্দন। সংগঠনটি অনেক দূর এগিয়ে যাক।
কেমুসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, ভাষাকে রপ্ত করা আমাদের দায়িত্ব। এজন্য ভাষার শিল্পায়ন করতে হবে। এটি যেন আমাদের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তার খোরাক হয়। ভুল শব্দচয়ন অন্ধকার সৃষ্টি করে দিতে পারে। এই অন্ধকার থেকে জাতিকে আলোর দিকে নিয়ে আসতে হলে প্রেম ও যুক্তির মাধ্যমে করতে হবে। প্রেম ও যুক্তি দিয়ে যেকোনো জিনিস সহজেই জয় করা যায়।
কবি ও বাচিকশিল্পী সালেহ আহমদ খসরু বলেন, কবিতা তো মুগ্ধের অপর নাম। যেই কবিতা জুলাই আন্দোলনে বিপ্লব হয়ে বিপ্লবীদেরকে অনুপ্রাণিত করেছে। কবি-সাহিত্যিকদেরকে সেই বিপ্লবী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রাহনামা শাব্বীর চৌধুরী বলেন, সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে একটি আলোকিত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আমরা পথচলা শুরু করেছিলাম। আজ আমাদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও অনুপ্রেরণার। আপনারা যেভাবে আমাদেরকে উজ্জীবিত করেছেন, আমরা মনে করি, অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো। অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন, সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: