Friday, August 15, 2025
Friday, August 15, 2025
Homeবিশেষ প্রতিবেদনসিলেট চারখাই-শেওলা মহাসড়কের চার লেনের কাজ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে...

সিলেট চারখাই-শেওলা মহাসড়কের চার লেনের কাজ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সিলেটের চারখাই-শেওলা (সুতারকান্দি) মহাসড়কের চার লেন উন্নয়ন প্রকল্পে ষড়যন্ত্র ও টালবাহানার প্রতিবাদে এবং করণীয় বিষয়ে সুধীজনদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে সিলেট নগরীর উপশহরস্থ একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে এ সভার আয়োজন করে বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি সিলেট।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের চারখাই-শেওলা (সুতারকান্দি) মহাসড়ক দিয়ে কয়েকটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। সড়কটি ছোট হওয়ায় প্রতিদিন দূর্ঘটনা হচ্ছে। প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে এই সড়ক দিয়ে সীমিত যানবাহন চলাচল করতো, কিন্তু বর্তমানে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। তাই এই সড়কে বেড়েছে দূর্ঘটনা। সড়কটি ছোট হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগে থাকে। যার ফলে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকালী লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পোহাতে হয়। তাই দীর্ঘদিন থেকে এই সড়কে চারলেন করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন জনসাধারণ। এই দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে একনেকের এক সভায় সড়কটি চারলেন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে শুরু হওয়ায় ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর কাজটি শেষ কথা। সকল প্রকার বাধাবিঘ্ন অপসারণক্রমে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সিলেট চারখাই-শেওলা মহাসড়কের চার লেনের কাজ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটের চারখাই-শেওলা (সুতারকান্দি) মহাসড়ক প্রায় পৌনে তিন লক্ষ মানুষ অধ্যুষিত প্রাচীন জনপদ বিয়ানীবাজারে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম স্থলপথ। পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ কাঠামো থাকলেও বিয়ানীবাজারে কোনো রেলপথ নেই। তাই এই সড়কটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, লাখো মানুষের যাতায়াতের এই সড়কটি যাতে দ্রুত সময়েরমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবসায়ন হয় সেই লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি সিলেটের সভাপতি ডা. এম ফয়েজ আহমদ বলেন, উপজেলার সুরমা-কুশিয়ারা নদীযুগল একসময় নৌপরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও বর্তমান দ্রুতগতির যুগে নৌপথ অনেকটাই অব্যবহৃত। ফলে সিলেট-চারখাই-শেওলা সড়কটি বিয়ানীবাজার এবং নিকটবর্তী গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও বড়লেখা উপজেলার অধিবাসীদের বিভাগীয় নগরী সিলেটের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি পরিকল্পনা গৃহীত হলে বিয়ানীবাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করতে থাকে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এমন একটি সম্ভাবনাময় ও জনআকাঙ্ক্ষিত প্রকল্প অযৌক্তিক অজুহাত এবং অজ্ঞাত মহলের অপতৎপরতার কারণে বন্ধ হয়ে গেলে তা হবে এলাকার জন্য বিরাট ক্ষতির কারণ। তাই সকল প্রকার বাধা-বিঘ্ন অপসারণ করে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করা হোক।

বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোবায়ের আহমদ খান বলেন, এই দাবিটি আমাদের দীর্ঘদিনের। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না, মহাসড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন এবং অজ্ঞাত অন্যান্য কারণে নির্ধারিত সময়সীমার মাঝামাঝি এসে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান ২৪টির মধ্যে বর্তমানে চালু থাকা ১৬টির মধ্যে অন্যতম শেওলা স্থলবন্দরটি সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। উক্ত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রধানত সিমেন্ট রপ্তানি হয়ে থাকে। তাছাড়াও প্রাণ ও সজীব গ্রুপের পণ্য সামগ্রী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুতারকান্দি সীমান্ত পথ দিয়ে প্রেরিত হয়। তার বিপরীতে ভারত থেকে পাথর, চুনাপাথর ও ফল আমদানীর রুট হচ্ছে শেওলা স্থলবন্দর। প্রতিদিন গড়ে দুইশত ট্রাক চলাচল করে উক্ত সড়কে। এই ধরনের একটি সম্ভাবনাময়, জন আকাঙ্খিত প্রকল্প অযৌক্তিক অজুহাতে এবং অজানা মহলের অপতৎপরতায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা সৃষ্টি হওয়ায় আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সকল প্রকার বাধাবিঘ্ন অপসারণক্রমে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্যে জোরালো দাবী জানাচ্ছি।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রাক্তন হেড মাস্টার আব্দুদ দাইয়ান, প্রাক্তন হেড মাস্টার কবির খান, এনাম আহমদ, বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি সিলেটের সহ সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আহাদ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক কবির আহমদ সিদ্দিকী, শিক্ষা ও পাঠাগার সম্পাদক আজমল হোসেন চৌধুরী ওয়েস, দপ্তর সম্পাদক মো. রাজ্জাকুজ্জামান চৌধুরী, সদস্য এমদাদ হোসেন চৌদুরী, আব্দুল ফাত্তাহ বকসি, মো. হানিফ আহমদ, ইসমত ইবনে ইসহাক সানজিদ, শহিদুল হাসান, মাহবুব আহমদ মুক্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ময়নুল ইসলাম, আবুল ফজল মো. আরিফ। এছাড়াও বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: