
তীব্র সংঘাতের রাত পার করেছে, ইরান ও ইসরায়েল। ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে ওঠে তেলআবিবের মধ্যরাতের আকাশ। বোমার আঘাতে ধসে পড়ে বেশ কিছু স্থাপনা। শুধু তেলআবিব নয়, জেরুজালেমসহ বড় বড় শহরেও হয় হামলা। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে। ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে- যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য যদি ইসরায়েলের ওপর হামলা ঠেকায়- হামলা হবে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা তাদের স্থাপনাতেও।
ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে। গত রাতে ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। এর মধ্যে হাইফা ও তেল আবিব শহর অন্যতম। এর ফলে ইসরাইলে কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছে। ইসরাইলে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া। সেখান থেকে প্রকৃত চিত্র পাওয়া খুব দুরূহ। এমনিতেই যুদ্ধকালীন কোনো প্রকৃত তথ্য পাওয়া কঠিন। কিছু তথ্য পাওয়া গেলেও তা নিরপেক্ষ সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও কিছু মিডিয়া যে খবর দিচ্ছে, তাতে ইরানের পাশাপাশি ইসরাইলেরও ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিবিসি সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরাইলের অনেক ভবনের ছবি প্রকাশ হয়েছে। সেসব মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভয়াবহতার মাত্রা কী পরিমাণ তা ওইসব ছবিই স্পষ্ট করে বলে দেয়। তেল আবিব মেট্রোপলিটন এলাকায় বাট ইয়াম শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র একটি ভববে আঘাত করেছে। সরাসরি আঘাতে ওই ভবনটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে।
ইসরাইলের ইমার্জেন্সি সার্ভিস এমডিএ নিশ্চিত করেছে সেখানে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১০০ মানুষ। পক্ষান্তরে ইরানের বেসামরিক লোকজন, তেলক্ষেত্র ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এর ফলে রাজধানী তেহরানে শাহরান তেলের ডিপোতে আগুন ধরে যায়। সেখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ক প্রকল্পগুলোকে টার্গেট করেছে। এতে এখন পর্যন্ত ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামি, সেনাপ্রধান সহ শীর্ষ কমান্ডাররা নিহত হয়েছেন। গত দু’দিনে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৮০। আহত হয়েছেন ৮০০ মানুষ। এর মধ্যে আছে ২০টি শিশু।
এমন এক জটিল সমীকরণে দাঁড়িয়ে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধের মীমাংসা করতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এবং পুতিন একমত হয়েছেন যে, এই যুদ্ধের ইতি ঘটতেই হবে।
ওদিকে আজ রোববার ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইরান তা বাতিল করে দিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইসরাইলের অব্যাহত হামলার মধ্যে কোনো সমঝোতার যৌক্তিকতা নেই।