Tuesday, August 5, 2025
Tuesday, August 5, 2025
Homeস্বাস্থ্যবোয়ালমারীতে মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টে বিপাকে একটি পরিবার ।

বোয়ালমারীতে মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টে বিপাকে একটি পরিবার ।

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: একই রোগের পরীক্ষায় উপজেলা ও জেলা সদরে অবস্থিত দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টার হতে দেয়া হয়েছে দুই ধরনের রিপোর্ট। এতে রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট অভিভাবক।

জানা যায়, ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়া গ্রামের জাহিদুল বেগের শিশুপুত্র জিহাদের পরিস্কারমতো পেশাব হতো না, মাঝে মাঝে ফোটা ফোটা পেশাব পড়তে থাকতো। জিহাদের এ শারীরিক সমস্যার কারণে গত ১৭ জুলাই ডা. মোহাম্মদ মফিজউদ্দিনকে দেখানো হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ মফিজউদ্দিন আড়াই বছর বয়সী জিহাদের রোগ নির্ণয়ের জন্য কিডনি টেস্ট (সেরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা) দেন। জাহিদুল বেগ ওই পরীক্ষাটি করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেইটস্থ মডার্ন ল্যাবরেটরি নামের একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ওই ডায়াগনস্টিক থেকে করা রিপোর্টে সেরাম ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা উল্লেখ করা হয় ২.৩ মিলিগ্রাম। রক্তে সেরাম ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা ০.৬ থেকে ১.৩ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার হয়ে থাকে। ক্রিয়েটিনিন হল পেশী থেকে উৎপন্ন একটি বর্জ্য পদার্থ, যা কিডনি শরীর থেকে ফিল্টার করে বের করে দেয়। যদি কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। আড়াই বছরের শিশুর সেরাম ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ২.৩ মিলিগ্রাম হওয়ায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মফিজউদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে কর্মরত অধ্যাপক ডা. এসি পালের নিকট পাঠান। পরে ওই দিনই রোগীর অভিভাবক ফরিদপুর জেলা সদরের নামকরা শিশু হাসপাতাল হিসেবে খ্যাত ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এ. সি পালকে দেখান। সেখানে চিকিৎসক ওই একই টেস্ট দেন। ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে করা সেরাম ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ০.৩ মিলিগ্রাম হয়, যা খুবই স্বাভাবিক। দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টের এমন বিস্তর ফারাকের কারণে রোগীর বাবাসহ সংশ্লিষ্টরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে জিহাদের দাদি জবেদা বেগম বলেন, মডার্ন ল্যাবরেটরী থেকে করা রিপোর্ট দেখে ডা. মফিজ উদ্দিন বলেন বাচ্চার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে তাকে দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যান। এ কথা শুনে পরিবারের সকলেরই কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। ওই দিনই ফরিদপুর গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে নতুন করে রিপোর্ট করানো হয়। সেখানে রিপোর্টে আসে কিডনিতে কোন সমস্যা নেই প্রস্রাবে একটু সমস্যা আছে। জানতে চাইলে মডার্ন ল্যাবরেটরির স্বত্বাধিকারী জিয়া বলেন, রিপোর্ট ভূয়া না। রিপোর্টে কম-বেশি হতে পারে। আমি আলফাডাঙ্গায় আছি। ফ্রি হয়ে পরে কল দেব- বলে লাইনটি কেটে দেন। এ ব্যাপারে ডা. মোহাম্মদ মফিজউদ্দিন বলেন, আমরা চাই ভালো মানের রিপোর্ট। যদি ভালো রিপোর্ট না হয় তবে আমাদের রোগীদের যথাযথ সেবা দিতে সমস্যা হয়। ভুল রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই ডিসিশন নিতে হয়। এতে করে রোগীরা সাফারার হয়।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মাহমুদ বলেন, একই দিনে দুটি রিপোর্ট করা হয়েছে। মডার্ন ল্যাবরেটরির রিপোর্টে আসছে ২.৩ আর ফরিদপুরের রিপোর্ট আসছে ০.৩। একই তারিখে রিপোর্টে এত পার্থক্য হওয়া উচিত না। এদিকে এভাবে ডায়াগনস্টিক রিপোর্টের ওপর অপচিকিৎসা নিয়ে মারাত্মক ক্ষতির শিকারের অভিযোগ নিত্যদিনের। জরুরী ভিত্তিতে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে নেয়ার দাবী ভুক্তভোগী মহলের।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: