
আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র
৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ।
১সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮ — ১সেপ্টেম্বর ২০২৫.
আজ ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই সময়ে আমি বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধার সাথে। অভিনন্দন জানাই-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের প্রতি, যে শত নির্যাতন, দমনে অবিচল থেকেছেন এবং এখনও গনতন্ত্রের লড়াই করে যাচ্ছেন। সম্মান জানাই দলের একনিষ্ঠ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের, যারা ভয়কে জয় করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নৈতিক লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে আমি বিএনপি’র সকল প্রয়াত-নিহত নেতাকর্মীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতাকর্মীর প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি, সেইসাথে দলের এই শুভক্ষনে আমি সকলকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আজ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫। বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল-বিএনপি’র ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ঐতিহাসিক প্রয়োজনে জাতির এক যুগ সন্ধিক্ষণে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৪৭ বছরের পথযাত্রায় শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও দিচ্ছেন।
নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বিএনপি তার রাজনৈতিক আদর্শ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ এর পতাকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অভিষ্ট লক্ষ্যে। দেশ ও জাতির প্রতি অঙ্গিকারাবদ্ধ এই দল ৪৭ বছরে দেশবাসীর সমর্থন ও ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। আমাদের অঙ্গীকার- ইস্পাত কঠিন গণঐক্যের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে স্বনির্ভর, গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন।
নির্মমভাবে শহীদ হয়েছেন বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্তমূলক মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসী রায় দিয়ে তাঁকে দীর্ঘ দিন থেকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। দলের অগণিত নেতাকর্মীকে পোশাকি- অপোশাকি ঘাতকের গুলিতে প্রাণ দিতে হয়েছে। প্রায় ৬০ লক্ষ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জর্জরিত ছিল। সাত শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তবুও থেমে থাকেনি বিএনপি’র অগ্রযাত্রা।
চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মৌলিক অধিকার হরণের মাধ্যমে রাজনীতির পথকেই সংকুচিত করে দিয়েছিল পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ এবং তার দোসররা।
তবে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে পতিত সরকার যে ধ্বংসস্তূপ রেখে গেছে, তার থেকে বের হয়ে গণতন্ত্রের চর্চার পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রেখে অন্তর্র্বর্তী সরকারের আমলে একটি নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন আদায় করা, ভোটারদের আস্থায় আনা এবং নতুন ধারার রাজনীতি ও সরকার গঠনে বিএনপি জনগণের সামনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও ৩১ দফা তুলে ধরা।
জীবিকার নিরাপত্তা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, সুশাসন, কর্মসংস্থান ও নাগরিক সুবিধা, সংযমী ব্যয়, কাঠামোগত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাস্তবায়ন কৌশলে ও সরকারের অস্পষ্ট নীতি ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোর ঘাটতি, আইনের অস্পষ্টতা ও জটিলতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও দুরিকরণে, বিএনপি জনগণের ভোটে সরকার গঠন করলে, উদ্যোগ নিবে ও পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে ইনশাআল্লাহ।
সোনালি স্মৃতি—
উত্তাল সময়ে,হৃদয়ে অদম্য এক স্বপ্ন নিয়ে ৯০ আর ২৪ এ আমরা যারা রাজপথে ছিলাম, প্রত্যেকে একটি লক্ষ্যকে ধারণ করেছিলাম—সত্য, ন্যায় আর অধিকার প্রতিষ্ঠা। জেল খেটেছি, জুলুম সহ্য করেছি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি এখনো স্পষ্ট মনে করতে পারি সেই দিনের কথা, যখন সূর্যের প্রখর তাপও আমাদের থামাতে পারেনি। স্লোগান, মিছিল, আর জনতার ঢল—সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। সেই দিনগুলো কেবলই আন্দোলন ছিল না, ছিল আত্মত্যাগ, সহমর্মিতা এবং অজস্র গল্পের জন্ম। আজ যখন পেছনে ফিরে তাকাই, তখন গর্বে বুক ভরে ওঠে—আমি ছিলাম সেই ইতিহাসের অংশ, যে ইতিহাস আজও তরুণদের প্রেরণা দেয়।
_______
খোদা হাফেজ – বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
মাহবুব চৌধুরী, বিএনপি নেতা, সংসদ সদস্য প্রার্থী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট মহানগর বিএনপি, ছাত্রদলের এক সময়ের কেন্দ্রীয় নেতা, সিলেট জেলা ছাত্রদলের প্রাত্তন যুগ্ম আহবায়ক, সিলেট মহানগরের সাবেক সহ সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী।